• রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জৈষ্ঠ ১৪২৯

সারা দেশ

এক লাখ মোমবাতি জ্বালিয়ে ভাষা শহীদদের স্মরণ

  • ''
  • প্রকাশিত ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

নড়াইল প্রতিনিধি:

“অন্ধকার থেকে মুক্ত করুক একুশের আলো”- এ শ্লোগানকে  সামনে রেখে মৌলবাদ, কুশিক্ষা, পশ্চাদমুখিতা আর সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর প্রত্যয় নিয়ে ভিন্নরকম আয়োজনের মধ্য দিয়ে নড়াইলে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হবে।  একুশের আলো উদযাপন পর্ষদের আয়োজনে বুধবার ২১ শের সন্ধ্যায় এক লাখ মোমবাতি জ্বালিয়ে ভাষা শহীদদের স্মরণ ও শ্রদ্ধা জানাবে নড়াইলবাসি ।  ইতিমধ্যে নড়াইল শহরের কুড়িডোব মাঠ প্রস্তুত করা হয়েছে।  এ আয়োজন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের নামে উৎসর্গ করলো আয়োজক কমিটি।  প্রতি বছরের ন্যায় এবার ও ২১শে ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় সূর্য্যঅস্ত যাবার সাথে সাথেই নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের কুড়িডোব মাঠে ।  চার একর জমির উপর ৩ হাজার কর্মী এক লাখ মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করবেন।  ব্যতিক্রমী এ আয়োজন দেখতে বিভিন্ন জেলা থেকে হাজার হাজার দর্শনার্থীরা আসেন।

মুহুর্তর মধ্যে অন্ধকার ছাপিয়ে সারামাঠ আলোকিত হয়ে যায়।  আলোর বর্ণিল ছটায় আলোকিত হবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের প্রতিকৃতি,শহীদ মিনার, জাতীয় স্মৃতিসৌধ, বিভিন্ন বর্ণমালা, আল্পনাসহ গ্রাম বাংলার নানা ঐহিত্যবাহী নকশা।  দৃষ্টি নন্দন এসব নকশা নড়াইলবাসীসহ ঢাকা ও বিভিন্ন জেলা থেকে আগত দর্শনার্থীরা উপভোগ করেন। মাঠে আসার সব পথ, অলিগলি মিশে মানুষের সমুদ্রে পরিনত হয় কুড়িডোব মাঠটি।  কেউ পায়ে হেটে, কেউ ভ্যানে বা রিক্সায় চড়ে, কেউবা প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল নিয়ে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন দেখেন।  সব চোখ গিয়ে পড়ে বাহারি আলোর বর্ণিলছটায়। ভাষা দিবস উপলক্ষে আয়োজকরা এবার ও ফানুষ ওড়াবেন।

সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটে একুশের আলো উদ্যাপন পর্ষদ-২০২৪ আয়োজিত প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের উদ্ধোধন করবেন নড়াইল জেলা প্রশাসক মোহম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরি।  আতথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন,নড়াইল জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এ্যাড, সুবাস চন্দ্র বোস ,নড়াইল পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মেহেদি হাসান , নড়াইল জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন খান নিলু, নড়াইল পৌরসভার মেয়র আঞ্জুমান আরা, একুশের আলো উদযাপন পর্ষদের অন্যতম সংগঠক প্রফেসার মুন্সি হাফিজুর রহমান,একুশের আলোর সহ-সভাপতি আ্যাডভোকেট ওমর ফারুক, সাধারন সম্পাদক কচি খন্দকার, পর্ষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি মলয় কুন্ড, অপর যুগ্ম সাধারন সম্পাদক খন্দকার সায়েদ আলী শান্ত । অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করবেন নড়াইল পৌরসভার কাউন্সিলর ও সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব শরফুল আলম লিটু।

উদ্ধোধনের পুর্বে বিকেল থেকে শুরু হবে আলোচনা, গণসঙ্গীত, আবৃতি, কবিতা পাঠ ও দেশাক্তবোধক গান পরিবেশনা স্থানীয় সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের শিল্পীরা ।  আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসিসহ বিভিন্ন গান পরিবেশনের মাধ্যমে আয়োজনকে আরো সমৃদ্ধ করে তোলবেন শিল্পীরা।

ভাষা শহীদদের স্মরণে নড়াইলে ব্যতিক্রমী এ আয়োজনের ১৯৯৭ সালে শুরু হয় নড়াইলের সুলতান মঞ্চ চত্বরে ।   মাত্র ৮ হাজার মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে এ আয়োজনের যাত্রা শুরু হয়।  এরপর আর থেমে থাকেনি। প্রতি বছর একুশ এর সন্ধ্যায় স্মরণ করা হয় ভাষা শহীদদের।  এখন বেড়েছে আয়োজনের পরিধি।  বিভিন্ন কোম্পানির স্পনান্সার করার কারণে বড় আয়োজন হতে এখন আর কোন সমস্যাই হয় না।  এবারও ১ লাখ মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে পালিত হবে অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।

দ্বীপশিখা প্রজ্জলনের অন্যতম সংগঠক নাট্যকার কচি খন্দকার এর নেতৃত্বে, ১৯৯৭ সালে সর্বপ্রথম ৪০- থেকে ৪৫ জন যুবক মিলে বীরশ্রেষ্ঠ নুর মোহাম্মদ স্মৃতি সংসদের ব্যনারে সর্ব প্রথম শহীদরে স্বরণে ৮ হাজার মোমবাতি জ্বালিয়েছিলেন ।  শুরুতে মাঠের ডিজাইন করেছিলেন শিল্পী কাজল মুখার্জী, শিল্পী দুলাল সাহাও লিটন।  আজ এ তিনজন শিল্পীসহ ঐ সময়কার সহযোগি শামীম. হাসিবুর মারা গেছেন। তাদের ত্যাগ মেধার ফসল আজ দ্বীপশিখা প্রজ্জ্বলন জাতীয়ভাবে পরিচিতি পেয়েছে ।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads